কক্সবাজারের মহেশখালীর প্রধান দুটি সড়কে ভোগান্তির শেষ কবে- এমন প্রশ্ন সর্বত্র। এছাড়াও প্রায় সময় মাতারবাড়ী-চালিয়াতলী সংযোগ সড়কের বেহাল দশা হলেও ব্যবস্থা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ- অভিযোগ স্থানীয়দের। বেশকিছু দিন থেকে মাতারবাড়ী ব্রীজের পূর্বপাশে সড়কে বড় ধরনের গর্তে যানবাহন বিকল হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটের সৃষ্টি হলেও দেখার যেন কেউ নেই।
মাতারবাড়ী-ধলঘাটা ইউনিয়নসহ কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে যোগাযোগের অন্যতম এ সড়কটির অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় যেন অভিভাবকহীন। কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়াতে অনেকেই আশা করেছিল মাতারবাড়ীবাসীর সড়ক দুর্ভোগের শেষ হবে। কিন্তু এখনো সড়কের অবস্থা ‘যে লাউ সেই কদু’। এমনই মন্তব্য ভোক্তভুগীদের।
বিগত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে এলজিইডির অর্থায়নে স্থানীয় চেয়ারম্যান মোহাম্মদ উল্লাহ সড়কটির মেরামত কাজ চালিয়ে গেলেও মানসম্মত কাজ না হওয়ায় আবারো ধসে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কর্তৃপক্ষের দায়সারা ভূমিকায় হতাশ স্থানীয়রা। প্রায় সময় সড়কে কিংবা কালভার্টের ভাঙন শুরু হলে জরুরী মেরামত না করে কালক্ষেপণ করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই অনেকক্ষেত্রে অল্পতেই সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সম্প্রতি ছোট মহেশখালীর মুদিরছড়া কালভার্টের ভাঙন দেখা দিলে কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে দ্বীপবাসী। বিধ্বস্ত কালভার্টে কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি এলজিইডি। অবশেষে ওই এলাকার রায়হান সিকদার নামে এক ব্যক্তি নিজ উদ্যোগে মেরামত কাজ করলে খানাখন্দে ভরা সড়কে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে আসে।
তবে মুদিরছড়া কালভার্ট মেরামত বিষয়ে ভিন্নকথা জানান উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে। তিনি বলেন, রায়হান সিকদার নামের ওই ব্যক্তি মেরামত কাজে সহযোগিতা করেছেন। ফান্ড আসা মাত্রই রায়হান সিকদার’কে টাকা পরিশোধ করা হবে।
শাপলাপুর-গোরকঘাটা সড়কেও ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কার কাজ চলছে। এছাড়া মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কের মেরামতের জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, কালভার্ট কিংবা সড়কে ফাটল বা গর্তের সৃষ্টি হলে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্রমেই বাড়ছে সড়কে ভোগান্তি। প্রায় সময় যানবাহন উল্টে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে জানমালের। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভোক্তভুগীদের ক্ষোভের যেন শেষ নেই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের জনতা বাজার-কালারমারছড়া-গোরকঘাটা সড়কের কাজ শুরু হলে স্বস্তিতে নেই মহেশখালীবাসী। কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের গাফেলতির কারণে ধুলাবালিতে নিঃশ্বাস নেওয়াটাও দায় হয়ে পড়ে। অনেকটা ধীরগতির কাজের ফলে বর্ষায় ধুলাবালি থেকে মুক্তি মিললেও বর্তমানে কর্দমাক্ত অসংখ্য খানাখন্দে ভরা সড়কে চলাচলে ভোগান্তির যেন শেষ নেই।
মহেশখালীতে দীর্ঘদিন থেকে উন্নয়ন ও জনদুর্ভোগ একসঙ্গে চলতে থাকলেও মাথাব্যথা নেই সংশ্লিষ্টদের। প্রতিনিয়ত সড়কে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েক দফায় এলজিইডি’র শাপলাপুর-গোরকঘাটা সড়কের কালভার্টের ভাঙনে বেশ কিছুদিন সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ ছিলো। বর্তমানে ওই সড়কে চালিয়াতলী স্টেশনের দক্ষিণে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিদিন আটকা পড়ে বিকল হচ্ছে যানবাহন।
অন্যদিকে কালারমারছড়া-গোরকঘাটা সড়কের সংস্কার কাজ আবারও শুরু হওয়ায় ওই সড়কে স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বলতে গেলে, সড়ক যন্ত্রনা যেন শেষ হবার নয়। এ অবস্থায় আদিনাত মন্দিরে ঘুরতে আসা অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন না ঘুরেই।
দীর্ঘদিন ধরে সড়কের ভোগান্তি শেষ না হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। মহেশখালীর প্রধান দুটি সড়কে প্রায় সময় চলে সম্প্রসারণ ও মেরামতের কাজ। কিন্তু নিম্নমানের কাজের ফলে কাজ শেষ না হতেই শুরু হয় ভাঙন। কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার কিংবা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও মানসম্মত কাজ না হওয়ায় প্রতিবছরই অপচয় হচ্ছে সরকারি টাকা- এমনটাই জানান সচেতন মহল।
প্রতিদিন বেশকিছু ভারি যানবাহন চলাচলে ওভারটেকিং করতে গিয়ে অনেক সময় ড্রেন ভেঙে পানি চলাচল ব্যাহত হলে অল্পতেই ভাঙনের শুরু হয়। ফলে জুড়াতালি লেগেই থাকে সড়কে। এ অবস্থায় সড়ক দূর্ভোগের শেষ কবে এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মহেশখালীতে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন মহেশখালীবাসী।
পাঠকের মতামত: